চলতি বোরো মৌসুমে সরকার যে কৃষকদের কাছ থেকে ধান কিনবে লটারিতে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত সেই কৃষকদের নামের তালিকা ইউনিয়ন অফিসের তথ্যকেন্দ্রে টানিয়ে রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।
বুধবার (১৩ মে) রাজধানীর মিন্টো রোডের সরকারি বাসভবন থেকে ঢাকা বিভাগের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে এক ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে এ নির্দেশনা দেন তিনি। ভিডিও কনফারেন্সে ঢাকা বিভাগের আওতাধীন প্রতিটি জেলার করোনা মোকাবিলা পরিস্থিতি, চলতি মৌসুমের বোরো ধান কাটা-মাড়াই, সরকারিভাবে ধান, চাল সংগ্রহসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন মন্ত্রী।
তিনি বলেন, চলতি মৌসুমে যারা বোরো চাষ করেছেন, সেই প্রকৃত কৃষকদের মধ্য থেকে লটারির মাধ্যমে নাম নির্বাচন করতে হবে। চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত কৃষকের নামের তালিকা ইউনিয়ন অফিসের তথ্যকেন্দ্রে ঝুলিয়ে রাখতে হবে, যাতে সবাই দেখতে পায়। এ সমস্ত কাজ অত্যন্ত স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার মধ্যে দিয়ে করতে হবে।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ধান, চাল সংগ্রহে প্রতিটি উপজেলায় সংগ্রহ কমিটি রয়েছে। এ কমিটিকে প্রতিটি ইউনিয়নে গিয়ে কৃষকের উপস্থিতিতে লটারি করতে হবে।
ধান দেওয়ার ক্ষেত্রে আর্দ্রতা নিয়ে একটু সমস্যা হয়, উপজেলার কৃষি অফিসে আর্দ্রতা মাপার যন্ত্র আছে। কৃষকের নামের লটারি করার পর উপজেলা কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা চূড়ান্ত ভাবে নির্বাচিত কৃষকদের বাড়ি গিয়ে ধানের আর্দ্রতা পরিমাপ করার ব্যবস্থা নিতে পারে। এটি কৃষকের জন্য খুব উপকার হবে।’
ঢাকা বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন, কৃষকের স্বার্থের কথা চিন্তা করে তাদের ফসলের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করার জন্য ধান, চাল কেনার ক্ষেত্রে ধানকেই অগ্রাধিকার দিতে হবে। কৃষক যেন কোনোভাবেই হয়রানির শিকার না হন সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী এবারের মৌসুমে ৮ লাখ মেট্রিক টন ধান সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ক্রয় করা হবে, যা করোনা দুর্যোগ মোকাবিলায় সহায়ক হবে।
খাদ্যমন্ত্রী আরও বলেন, খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা করোনা মোকাবিলা করে এই খাদ্য সংগ্রহ কার্যক্রম চালাচ্ছে। খাদ্যশস্য সংগ্রহে যাতে কোনো অনিয়ম না হয়, সে জন্য কর্মকর্তাদের তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখতে হবে। এছাড়া সংগ্রহ কার্যক্রমে সবাইকে সহযোগিতা ও করোনা মোকাবিলায় সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক স্বাস্থ্যবিধি ও নিরাপদ দূরত্ব মেনে চলার আহ্বান জানান তিনি।
ভিডিও কনফারেন্সে উপস্থিত থেকে খাদ্য সচিব ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম বলেন, বস্তার গায়ে স্টেনসিল ব্যবহার করতে হবে এবং খাদ্য বান্ধব, ওএমএসসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বরাদ্দকৃত চালের বস্তার গায়ে আলাদা আলাদা সিল ব্যবহার করতে হবে।
ঢাকা বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার, ঢাকা আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকসহ ফরিদপুর, রাজবাড়ী, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, কিশোরগঞ্জ, গাজীপুর, নরসিংদী, মুন্সীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, টাঙ্গাইল জেলার জেলা প্রশাসক, ঢাকা বিভাগের আওতাধীন প্রতিটি জেলার জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকরাও ভিডিও কনফারেন্সে বক্তব্য রাখেন।